বেলুড় মঠের ম্যানেজার স্বামী অভয়ানন্দ (ভরত মহারাজ) পর্ব 3

বাংলাদেশে শ্রীমা সারদাদেবীর শিষ্যবৃন্দ ও তাদের স্মৃতিমালা _ভরত মহারাজ

ভক্ত যাঁরা মঠে আসতেন তাঁদের যত্ন-আপ্যায়নের প্রতি তাঁর(বাবুরাম মহারাজের) বিশেষ নজর থাকত।

তিনি বলতেন ঃ “দ্যাখ, ওরা শ্রীশ্রীঠাকুরের কাছে আসছে,

তাের বা আমার কাছে নয়।

তুই নিশ্চয় ঠাকুরকে ভালবাসিস, ভালবাসিস তাে?

তাহলে ঠাকুরের কাছে যারা আসছে তাদেরও সেই নজরে দেখবি।

প্রিয়জনের মতাে দেখবি, দেখবি ভক্তি-শ্রদ্ধার সঙ্গে।

সতর্ক দৃষ্টি রাখবি যাতে ওদের আদর-আপ্যায়নের কোনও ত্রুটি না হয়ে যায়।

মনে হয়,

বেলুড় মঠের ম্যানেজার স্বামী অভয়ানন্দ (ভরত মহারাজ) পর্ব 3

বেলুড় মঠের ম্যানেজার স্বামী অভয়ানন্দ (ভরত মহারাজ) পর্ব 3
বেলুড় মঠের ম্যানেজার স্বামী অভয়ানন্দ (ভরত মহারাজ) পর্ব 3

এসব তিনি বলতেন যাতে ওঁদের সম্পর্কে আমাদের মনে কোনও রকম উপেক্ষার বা বিরক্তির ভাব না আসে।

  • তাঁর সেই মহৎ,
  • উদার,
  • আশ্চর্য প্রেমানুভূতি আমি লক্ষ্য করতাম
  • – মানুষের প্রতি প্রেম,
  • প্রত্যেকের প্রতি।

বাবুরাম মহারাজের ঐকান্তিক প্রেরণায় যেমন শ্রীশ্রীমায়ের কাছে আমার দীক্ষালাভ হয়েছিল,

তেমনই তাঁরই বিশেষ আগ্রহে জয়রামবাটীতে গিয়ে মায়ের দর্শনলাভ এবং

তাঁর সান্নিধ্যলাভেরও সুযােগ হয়েছিল একবার।

এই সুযােগটি ঘটে মায়াবতীতে তিন-চার বছর থাকার পর

কিছুদিনের জন্যে যখন বেলুড় মঠে ফিরে আসি সেই সময়ে।

মেদিনীপুরে বন্যার সময়ে সেখানে কয়েকমাস রিলিফের কাজ করার পর

আমাকে মায়াবতী আশ্রমে কর্মী হিসাবে পাঠানাে হয়।

বাবুরাম মহারাজের ইচ্ছা ছিল

আমি মায়াবতী চলে যাই।

তিনি আমাকে আপত্তি জানাতেও বলেছিলেন।

কিন্তু আপত্তি আমি করিনি।

কর্তৃপক্ষ – স্বয়ং স্বামী ব্রহ্মানন্দ।

এবং স্বামী সারদানন্দ—যে ব্যবস্থা করেছেন তা আমি বিনা বাক্যে মেনে নেব না কেন ?

বুঝতে পেরেছিলাম,

আমি মায়াবতী চলে যাওয়ায় বাবুরাম মহারাজ মনে মনে ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন।

এর মূলে অবশ্যই ছিল আমার প্রতি তাঁর অহেতুক স্নেহ-ভালবাসা।

যাই হােক,

তিন-চার বছর পরে মায়াবতী থেকে কয়েকদিনের জন্যে যখন বেলুড় মঠে এসেছি,

সেই সময়ে বাবুরাম মহারাজ একদিন সকালে আমাকে বললেন ঃ

তুই তাে এখন এদিকছাড়া হয়ে গেছিস! হারে,

  • এখানে এলি, মায়ের দর্শন হয়েছে ?
  • কখনও মায়ের বাড়ি জয়রামবাটী গেছিস ?

আমি বললাম ঃ না মহারাজ, এবার দর্শন তাে হয়নি ।

জয়রামবাটী কখনও যাইনি।

এমনিতে জয়রামবাটী সম্পর্কে আমার একটা ভীতি ছিল ।

জয়রামবাটীকে আমার মশা আর ম্যালেরিয়ার আবাসভূমি মনে হতাে।

এরকম জায়গায় নিজে থেকে কখনও আমার যাওয়ার ইচ্ছে হয়নি।

তীর্থযাত্রী যে ভক্তি-শ্রদ্ধা নিয়ে তীর্থস্থানে যায়,

সেই ভাব নিয়ে জয়রামবাটী যাওয়ার চিন্তা আমার মনে কখনও আসেনি।

বাবুরাম মহারাজ বললেন ও এবার মায়াবতী ফেরার আগে জয়রামবাটী ঘুরে আয় না কেন ?

কিন্তু আমি যে যাব, যাবার জন্য তাে কিছু টাকা-পয়সা চাই ।

মায়াবতী ফিরে যাওয়ার যতটুকু ভাড়া, ততটুকুই আমার কাছে ছিল,

তার অতিরিক্ত এক পয়সাও ছিল না।

তাহলে কি করে জয়রামবাটী যাব ?

তাকে সেই কথা জানালে তিনি বললেন ঃ

টাকার জন্য তােকে ভাবতে হবে না, সে ব্যবস্থা হয়ে যাবে।

তারপর সন্ধ্যাবেলায় আমাকে ডেকে বললেন ঃ ‘কাল সকালেই রওনা হয়ে যা।

শ্রীরামপুর থেকে এক ভদ্রলােক ও এক ভদ্রমহিলা দীক্ষা।

নেবার জন্য জয়রামবাটী যাচ্ছেন।

তারা হাওড়া স্টেশনে তাের জন্য।

অপেক্ষা করবেন। তাদের সঙ্গে যাবি তুই।

যাওয়ার সময় সবকিছু সুষ্ঠুভাবেই হলাে।

ঐ ভদ্রলােক ও ভদ্রমহিলার বাসন্তীপূজার সপ্তমীর দিন দীক্ষার কথা,

আমরা পৌছলাম আগের দিন।

ওঁরাই সব খরচপত্র বহন করলেন—টিকিট কেনা এবং অন্যান্য সবকিছুই।

জয়রামবাটীতে শ্রীশ্রীমায়ের বাড়িতে সেবার তিন-চার দিন ছিলাম ।

ওখানে দুটি ছেলেকে সেই প্রথম দেখলাম ঃ রামময় ও বরদা।

এছাড়া সেখানে ছিল এক বলিষ্ঠ যুবক,

খুব শক্ত-সমর্থ চেহারা এবং দেখেই মনে হয় বেপরােয়া।

সে সিলেটের জ্ঞান তার সঙ্গে আমার পরিচয় ছিল ।

আমাকে দেখেই সে অভ্যর্থনা জানাল ঃ ‘আসুন, আসুন।

ওদিকে চলুন, মাকে দর্শন করবেন।

জয়রামবাটীর বাড়ির কোথায় কি,

কোন ঘরে কে থাকেন বা কি হয়,

কিছুই আমার জানা ছিল না ।

জ্ঞান আমাকে রান্নাঘরের দিকে নিয়ে যাচ্ছে দেখে বিস্মিত হচ্ছিলাম।

প্রায় চেঁচিয়েই বলে উঠলাম ও ‘এ কি করছ তুমি,

  • রান্নাঘরে নিয়ে যাচ্ছ কেন ?
  • মা কোথায় ?

আমি মাকে প্রণাম করতে এসেছি ঠিকই,

কিন্তু তিনি এখন রান্নাঘরে ব্যস্ত থাকেন তাে সেখানকার কাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত তাে

আমি অপেক্ষা করতে পারি।

কিন্তু এসব বললে কি হবে,

জ্ঞানকে নিরস্ত করা গেল না।

সে আমাকে রান্নাঘরে শ্রীশ্রীমার সামনে হাজির করিয়ে ছাড়ল।

আমি সেখানেই মাকে প্রণাম করলাম।

জিজ্ঞেস করলাম ও মা, আপনি এখানে কি করছেন,

রুটি সেঁকছেন ?’

তিনি বললেন ঃ ‘বাবা, এখানকার লােক রুটি খায় না।

কোলকাতা থেকে আমার ছেলেরা যখন আসে তাদের জন্য রুটি করি।’

বাংলাদেশে শ্রীমা সারদাদেবীর শিষ্যবৃন্দ ও তাঁদের স্মৃতিমালা স্বামী অভয়ানন্দ (ভরত মহারাজ)

বেলুড় মঠের ম্যানেজার স্বামী অভয়ানন্দ (ভরত মহারাজ) পর্ব 3
বেলুড় মঠের ম্যানেজার স্বামী অভয়ানন্দ (ভরত মহারাজ) পর্ব 3

সেই সময়ে জয়রামবাটীতে অনেক অতিথি।

তাদের জন্য শ্রীশ্রীমা রুটি করছিলেন।

মা আমাকে বললেন : ‘যাও বাবা, মুখ হাত ধুয়ে নাও।

আমি একটু পরেই আসছি।

আমার সঙ্গীদের দীক্ষাসংক্রান্ত পত্রটি শ্রীশ্রীমাকে দিলাম।

সপ্তমীর দিন ওঁদের দীক্ষা হবে এই ঠিক হলাে।

আগেই বলেছি, আমরা ওখানে গিয়েছিলাম বাসন্তীপূজার সময়ে।

জয়রামবাটীতে শ্রীশ্রীমাকে দেখলাম ভিন্ন রূপে –

কোলকাতায় উদ্বোধনের বাড়িতে যেমন দেখেছিলাম ঠিক তেমন নয়।

মা এখানে ঘরােয়া সাজে

– ঘমটা ছিল না।

সরলতা আর পবিত্রতার প্রতিমূর্তি।

যাবতীয় গৃহস্থালির কাজে তিনি নিরত।

একদিন ভােরবেলা তাঁকে দেখলাম,

হাতে একটি পাত্র কষ্ট করে হাঁটছেন।

বােধহয় পায়ে বাতের জন্যে চলতে কষ্ট হচ্ছিল।

পাত্রটি নিয়ে তিনি যাচ্ছিলেন কোন প্রতিবেশীর বাড়ির দিকে।

পথে দেখা হতে জিজ্ঞেস করলাম ।

এত ভােরে কোথায় যাচ্ছেন মা ?’

বললেন গােয়ালার বাড়ি যাচ্ছি, দুধের জন্য।

আমার কোলকাতার ছেলেদের সকালে চা খাওয়ার অভ্যাস, তাই দুধ আনতে যাচ্ছি।’

শ্রীশ্রীমা নিজেই চলেছেন দুধ জোগাড় করতে !

বিস্মিত হয়ে গেলাম।

উদ্বোধনের বাড়িতে তার ঘােরাফেরার অবকাশ ছিল না,

তাই সেখানে তিনি নববধূর মতাে আড়ষ্ট হয়ে থাকতে বাধ্য হতেন।

কিন্তু জয়রামবাটীতে তিনি স্বাধীন,

আর সর্বদা কাজ করছেন নিজেই করছেন সব কাজ।

চলে যেতে যেতে তিনি ফিরে দাঁড়িয়ে বললেন ঃ

‘ঐ ঘরের বারান্দায় কুটনাে কোটার সময়ে তােমার কাছ থেকে মায়াবতীর গল্প শুনব।

তাঁর শয়নঘরের ঠিক বাইরে তরকারি কোটা হতাে।

তিনি আবার বললেন :

‘ঐখানে তুমি আসবে আর মায়াবতীর সব কথা, সবকিছু শুনব।’

তাঁর কথামতাে আমি যথাসময়ে হাজির হলাম।

তিনি কুটনাে কুটতে থাকলেন আর আমি মায়াবতীর কথা বলে চললাম।

যে তিন-চার দিন জয়রামবাটীতে ছিলাম,

সেই কয়দিনই এইভাবে মায়াবতী-প্রসঙ্গ চলেছিল।

তিনি ধর্মপ্রসঙ্গে অথবা আধ্যাত্মিক বিষয়ে আমাকে বিশেষ কিছু বলেননি,

আমিও তাকে কিছু জিজ্ঞেস করিনি।

তবে কথাপ্রসঙ্গে তিনি মাঝে মাঝে বলতেন ?

  • যেখানেই থাক,
  • যে-কাজের মধ্যেই থাক,
  • ঠাকুরকে সদাসর্বদা ধরে থেকো।’

তিনি অল্পকথায় উপদেশ দিতেন।

নিজের আধ্যাত্মিক অনুভূতির বিষয়ে আমার কাছে কখনও কিছু বলেননি।

বাংলাদেশে শ্রীমা সারদাদেবীর শিষ্যবৃন্দ ও তাঁদের স্মৃতিমালা _ভরত মহারাজ

বেলুড় মঠের ম্যানেজার স্বামী অভয়ানন্দ (ভরত মহারাজ) পর্ব 6
বেলুড় মঠের ম্যানেজার স্বামী অভয়ানন্দ (ভরত মহারাজ) পর্ব 6

শরীরত্যাগের পূর্বে তাঁকে আমার শেষ দর্শন হয় উদ্বোধনে-তখন তিনি বিশেষ পীড়িত।

শ্যামাদাস কবিরাজ মহাশয় তখন নিয়মিত উদ্বোধনের বাড়িতে এসে তাঁর চিকিৎসা করতেন।

তাঁকে তখন দেখেছিলাম ও শান্তভাবে সব রােগযন্ত্রণা সহ্য করছেন।

সতীশ মহারাজ-কাশীর সত্যানন্দ স্বামী আর আমি তাঁকে প্রণাম করতে গিয়েছিলাম ।

বেলুড় থেকে আমার মায়াবতী ফিরে যাবার কথা,

তারপর সেখান থেকে মানস সরােবরের পথে যাত্রা করার কথা।

আমি মায়ের আশীর্বাদ চাইলাম।

সব শুনে তিনি বললেনঃ ‘বাবা, আমি শুনেছি, মানস বড় দুর্গম তীর্থ ।

খুব সাবধানে থাকবে ।

যা-ই কর, সর্বদা ঠাকুরকে ধরে থেকো।’

 মানসের পথে আমার একটি আশ্চর্য দর্শন হয় স্বপ্নদর্শন।

 এই সূত্রে বলে রাখা দরকার,

আমার সাধারণত দর্শন জাতীয় অভিজ্ঞতা হয় না।

 মানসতীর্থে যাওয়ার পথে আলমােড়া জেলার ভিতর এক জায়গায় কয়েকদিন আমরা বিশ্রাম করেছিলাম।

 সেখানে কয়েকজন পরিচিত ব্যবসায়ীর আতিথ্য গ্রহণ করি।

 একটি ছােট বাড়িতে আমাদের থাকতে দেওয়া হয়েছিল।

 সেইখানেই প্রথম অথবা দ্বিতীয় রাতে আমি একটি স্বপ্ন দেখি।

 ঘুম ভাঙার পর ঘড়িতে দেখেছিলাম, রাত তখন দুটো।

স্বপ্নে দেখলাম শ্রীশ্রীমাকে।

 মাকে যেন অপূর্ব সাজে সাজানাে হয়েছে,

চরণ দুখানি আলতায় রাঙানাে ।

সুন্দর, পরিষ্কার একটি শাড়ি পরনে, গলায় ফুলের মালা।

 মাকে দীপ্তিময়ী দেখাচ্ছিল।

যেখানে মাকে এনে রাখা হয়েছে,

সেই জায়গাটিও স্পষ্ট দেখেছিলাম।

সেটি হলাে –গঙ্গাতীরবর্তী সেই স্থান,

যেখানে এখন তাঁর মন্দির।

 অনেক লােকের সমাবেশ সেখানে দেখলাম।

 কিন্তু মাকে ওরা কাঁধে বয়ে এনেছে না গাড়িতে এনেছে তা বুঝতে পারলাম।

ভিড়ের মধ্যে তিনজনকে স্পষ্ট দেখেছি ঃ

মাখন সেন, সুরেশ মজুমদার এবং ঐ দলের আর এক ভদ্রলােক

যার নাম এখন মনে করতে পারছি না।

আশ্চর্যের বিষয়,

দ্বিতীয়বার এই দৃশ্য অথবা শ্রীশ্রীমাকে কেন্দ্র করে অন্য কোনও দৃশ্য স্বপ্নে আসেনি।

মানস থেকে ফেরার পথে আমরা তাকলাকোটে বিশ্রাম করেছিলাম।

তাকলাকোট একটি বড় ব্যবসার জায়গা।

ওখানে তখন সাধারণত পণ্যবিনিময়ে ব্যবসা চলত ।

 অর্থাৎ ভারতীয় জিনিসের বিনিময়ে ঐ জায়গার জিনিস পাওয়া যেত।

 পশম আর পশমে তৈরি জামাকাপড়ের আদান

বাংলাদেশে শ্রীমা সারদাদেবীর শিষ্যবৃন্দ ও তাঁদের স্মৃতিমালা স্বামী অভয়ানন্দ (ভরত মহারাজ)

প্রদানই ছিল প্রধান ব্যবসা।

 ভারতের বাসিন্দা ভুটিয়ারাও ওখানে তাদের জিনিসপত্র নিয়ে গিয়ে ব্যবসা করত।

 ভারত সরকারের পক্ষ থেকে একজন কমিশনার ওখানে গিয়ে দেখাশুনা করে আসতেন,

দরদাম বেঁধে দিয়ে আসতেন।

লােকজন নিয়ে তিনি একটি বিরাট তাঁবুতে থাকতেন ।।

যাওয়ার পথে তাঁকে দেখিনি, কিন্তু ফেরার পথে সেই অফিসারকে দেখলাম।

অফিসারটি পাঞ্জাবের অধিবাসী।

 যেখানে তাঁর সঙ্গে দেখা হলাে সেখান থেকে তাঁর তাঁবু কিছু দূরে।

 ভদ্রলােকটি আমাদের সেই তাঁবুতে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিশেষ আগ্রহ প্রকাশ করলেন।

 আমাকে নমস্কার করে তিনি বললেন :

মহারাজ আপনাদের জন্যই অপেক্ষা করছিলাম।

তার তাবুতে গিয়ে আমাদের খুব আরাম হলাে।

 সেখানে দু-একটা খবরের কাগজ আছে, দেখতে পেলাম।

 তিনি প্রথমে আমাদের সেসব পড়তে দিলেন না।

 চা খাওয়ার পর তিনি জানালেন,

রামকৃষ্ণসঙ্ঘের পক্ষে একটা দুঃসংবাদ আছে।

পাঞ্জাব থেকে প্রকাশিত একটা খবরের কাগজ তিনি আমাদের পড়তে দিলেন।

 দুটি দুঃসংবাদ ঐ পত্রিকায় ছিল।

 প্রথম খবরটি হলাে ঃ শ্রীশ্রীমা দেহত্যাগ করেছেন।

 মােটামুটি বিস্তারিত আকারে সংবাদটি প্রকাশ করা হয়েছে।

 দ্বিতীয় সংবাদটি এক বিখ্যাত জননেতার পরলােকগমন সংক্রান্ত।

এই প্রসঙ্গে বলা যেতে পারে,

যে-রাত্রে আমি শ্রীশ্রীমায়ের শরীরত্যাগের স্বপ্নটি দেখি,

তার পরের দিন সতীশকে সেটি তার ডায়েরীতে লিখে রাখতে বলি।

 সে এই খবরের কাগজে সংবাদটি দেখার অনেক আগের কথা।

 কিন্তু আর কখনও শ্রীশ্রীমা আমাকে স্বপ্নে দেখা দেননি।

 তাঁকে স্বপ্নে দেখেছি সেই একবারই কিন্তু সে-দর্শন অতিশয় স্পষ্ট।

 অতি স্পষ্ট দেখেছিলাম তার মুখ,

তার চোখ এবং তাঁকে ঘিরে থাকা সব লােককে।

 মনে আছে,

অপূর্ব সুষমায়পূর্ণ সেই মুখমণ্ডল – আমার স্বপ্নে দেখা মায়ের সেই মুখখানি।

পরে মিলিয়ে দেখেছি, ঠিক সেদিনই শ্রীশ্রীমা শরীরত্যাগ করেন ।

বাংলাদেশে শ্রীমা সারদাদেবীর শিষ্যবৃন্দ ও তাঁদের স্মৃতিমালা স্বামী অভয়ানন্দ (ভরত মহারাজ)

আরও পড়ুন

তিনি ছিলেন বেলুড় মঠের ম্যানেজার স্বামী অভয়ানন্দ পর্ব ২

প্রাচীন সাধুদের কথা _স্বামী অভয়ানন্দ(ভরত মহারাজ)

আজ নিরালায়

Leave a Comment