ভাল কাজে ভাল আশা করা যেতে পারে তবে জয়ের গর্বটী ভুলে যেতে হবে

॥ কর্মের পথে !

ভাল কাজে ভাল আশা করা যেতে পারে তবে জয়ের গর্বটী ভুলে যেতে হবে
ভাল কাজে ভাল আশা করা যেতে পারে তবে জয়ের গর্বটী ভুলে যেতে হবে

ভাল কাজে ভাল আশা করা যেতে পারে।

তবে জয়ের গর্বটী ভুলে যেতে হবে।

বেশী ভরসা ভাল নয়,

তাতে মনে আসবে কতব্যে তাচ্ছিল্য অথবা নিজের সম্বন্ধে গর্ব।

উদ্বিগ্নমনে থাকলে সকলকেই আশা ও ভয়ের দোলায় দুলতে হবে—

মনের মধ্যে ঘোঁটি পাকাবে, ঘুম হবে না।

তখন নিজের সব বিশ্বাস এক কোরে ঠাকুরের কাছে প্রার্থনা করবে,

“যা দরকার সেইটে আমাকে দিয়ে করাও”

—তার পর থেকেই মনে শান্তি ও বল পাবে।

আধ্যাত্মিক ও ব্যবহারিক তৎপরতা হতে মানুষকে বিরত করে দুটো অবস্থা—পথের পরিশ্রম ও বিপদের ভয়।

জলে থেকেও পদ্মপাতা ভেজে না।

  • সেই রকম,
  • আপনি যদি সংসারে থেকেও সংসারী না হন,
  • তাহলেই আপনি মুক্ত।

কিভাবে মুক্ত?

বাইরে আপনাকে কর্মব্যস্ত দেখালেও ভিতরে ভিতরে আপনি শান্ত।

  • সব কাজই আপনি সতর্ক থেকে নিখুঁতভাবে করছেন,
  • কিন্তু মনে মনে জানেন আপনি কিছুই করছেন না,
  • আপনি অকর্তা।

আর কোন কাজে আমিত্ব বা কর্তৃত্ব বােধ না থাকলে আপনি মুক্ত।

ভাল কাজে ভাল আশা করা যেতে পারে তবে জয়ের গর্বটী ভুলে যেতে হবে
ভাল কাজে ভাল আশা করা যেতে পারে তবে জয়ের গর্বটী ভুলে যেতে হবে

মনের এই অবস্থায় নিজের ইচ্ছা বলে কিছু থাকে না।

  • যে কাজ আপনি করেন,
  • হয় তা ঈশ্বরের প্রীতির জন্য,
  • না হয় সমষ্টির স্বার্থে।

আপনার অহংবােধ বা স্বার্থবােধ সম্পূর্ণভাবে মুছে গেছে।

এটিই যথার্থ ত্যাগ।

অন্যদিক থেকে বলা চলে,

এটিই সবকিছুকে গ্রহণ করে আত্মার বিস্তার।

এই অবস্থায় পৌছানাে কি সম্ভব?

প্রতিদানের আশা না করে আপনি কি কাজ করে যেতে পারেন?

ধরে নিলাম পারেন,

সেক্ষেত্রেও কি কাজের সময় আপনার উৎসাহ সমানভাবে বজায় থাকবে?

এ প্রশ্ন এই জন্যই উঠছে যে,

লাভের জন্যই মানুষ কাজ করে।

  • যেখানে নিজের কোনও লাভ নেই,
  • সেখানে আপনি কেন কাজ করবেন?
  • তার উত্তর এই,
  • নিঃস্বার্থ কর্মের দ্বারা চরম যে লাভ,
  • আপনি সেই মুক্তির অধিকারী হবেন।

এখন আপনি দেহ ও মনের খামখেয়ালিপনার দাস।

এই দাসত্বের হাত থেকে কি আপনি নিষ্কৃতি চান না?

তা যদি চান, তাহলে স্বার্থবােধ নিধন করতে কবে।

নিজের স্বার্থে কাজ করলে আমরা বদ্ধ।

কিন্তু সকলের স্বার্থে যদি কাজ করি,

তাহলে মুক্তি আমাদের হাতের মুঠোয়।

ভাল কাজে ভাল আশা করা যেতে পারে তবে জয়ের গর্বটী ভুলে যেতে হবে
ভাল কাজে ভাল আশা করা যেতে পারে তবে জয়ের গর্বটী ভুলে যেতে হবে

শ্রীঠাকুর আদর্শ সন্ন্যাসী।

এদিকে সন্ন্যাস ও সংসারের অপূর্ব সংমিশ্রণ শ্রীসারদাদেবীর জীবনে।

ঠাকুর টাকা ছুঁতে পারতেন না,

হাত বেঁকে যেত।

শ্রীমা টাকা মাথায় ঠেকাচ্ছেন–মা লক্ষী।

অর্থ যে সকল অনর্থের মূল,

তা তিনিও।

জানতেন–পাকাপাকি জানতেন ঠাকুরেরই মত।

ঠাকুরের কাছে সব মিথ্যা–জগৎই মিথ্যা।

বলেছিলেন:

ওরে রামলাল,

যদি জানতুম জগৎটা সত্যি,

তবে তােদের কামারপুকুরটাই সােনা দিয়ে মুড়ে দিয়ে যেতুম।

জানি,

ওসব কিছু না–ভগবানই সত্যি।

অথচ শ্রীমায়ের কাছে যেন সবই সত্যি, এমনই ব্যবহার।

দুটি জীবন যেন আপাত-বিরােধী,

কিন্তু পরস্পরের পরিপােষক।

একটি যেন বেদ,

অপরটি ভাষ্য।

আর দু’জনেই যেন পাশাপাশি বসে আছেন অসীমের ঘরে।”

স্বামী অপূর্বানন্দ প্রাণের ঠাকুর ও জগৎজননী মায়ের রাতুল চরণে জানাই শতকোটি প্রনাম।

ঈশ্বর : অস্তিত্বও ধারণা

ভক্তিযােগ ও কমর্যোগ কাকে বলে — জ্ঞানের লক্ষণ

1 thought on “ভাল কাজে ভাল আশা করা যেতে পারে তবে জয়ের গর্বটী ভুলে যেতে হবে”

Leave a Comment