শ্রীশ্রীমায়ের কাছ থেকে গৈরিক বস্ত্র স্বামী গিরিজানন্দ

স্বামী গিরিজানন্দ

শ্রীশ্রীমায়ের কাছ থেকে গৈরিক বস্ত্র স্বামী গিরিজানন্দ
শ্রীশ্রীমায়ের কাছ থেকে গৈরিক বস্ত্র স্বামী গিরিজানন্দ

শ্রীশ্রীমায়ের কাছ থেকে গৈরিক বস্ত্র স্বামী গিরিজানন্দ

আমি কাছা দিয়ে কাপড় পরতাম এবং জুতা-জামা সৰ গৃহস্থদের মত ব্যবহার করতাম ।

মামা সেজন্য আমাকে বাবু বলে ডাকতেন ।

পরদিন মধ্যাহ্ন ভােজনের সময় মা বললেন, “বাবা, দই দেবাে কি! আমি লজ্জাবশত হঠাৎ বলে ফেলেছি “

না দরকার নেই।

” মা তখন বললেন, “এটা বে’র দই – কাজ নেই খেয়ে ।”

তখন বুঝলাম, সাধুদের বিবাহ দর্শন ও বিবাহ ভােজনাদি করতে নেই ।

মা বলেছিলেন,

“ঠাকুর শ্রাদ্ধের অন্ন খেতে নিষেধ করেছেন, তবে আদ্য শ্ৰাদ্ধটা বিশেষ করে নিষেধ করেছেন ।

যখন যা খাবে ঠাকুরকে নিবেদন করে খাবে।”

একদিন মাকে বলেছিলাম, “মা ঠাকুরকে দর্শন করতে বড় ইচ্ছা হয়।

” মা বললেন, “আহা ! ঠাকুর যদি একবার দর্শন দিতেন ! হবে অন্তত শেষ সময়েও হবে ।

কোন রকমে এই জীবনটা কাটিয়ে দাও। আর আসতে হবে না , এই শেষ জন্য।”

প্রায় ১২। ১৪ দিন মার ওখানে থাকার পর যােগােদ্যানে যাব স্থির করেছি, মা বললেন,

“পাগলী (রাধুর মা) ক্ষেপেছে, গঙ্গাস্নানে যাবে, তুমি বাপু, একে কোলকাতায় কুসুমের বাড়ি দিয়ে যেও ।

আমি বালক হলেও পাগলী মামীকে সঙ্গে নিয়ে যেতে সম্মত হলাম।

মার আদেশ! মাকে প্রণাম করে তার সম্মুখে দাঁড়িয়েছি,

তিনি আমার হাত নিয়ে কনিষ্ঠ অঙ্গুলিটি দাঁত দ্বারা ঈষৎ দংশন করলেন এবং

মস্তকে কিঞ্চিৎ মুখামৃত সিঞ্চন করলেন ।

আমি আনন্দে ভরপুর হয়ে গেলাম ।

তার স্নেহ ভালবাসায় আত্মহারা হলাম।

সেরাত্রে কামারপুকুরে ঠাকুরের বাড়িতে ছিলাম ।

রামলাল দাদা তখন কামারপুকুরে ।

দাদা বললেন, ‘ভায়া, তুমি ছেলে মানুষ, ছােট মামীও পাগল, একে নিয়ে যেতে তুমি রাজি হলে কেন ?

আমি বললাম, “মার আদেশ।” দাদা শুনে চুপ করে রইলেন।

যে কৈকালা তেলােভেলাের মাঠে মা সঙ্গীছাড়া হয়ে ডাকাত বাবার।

আশ্রয়লাভ করেছিলেন পরদিবস আমাকে সে মাঠ এই পাগলিনীকে নিয়ে অতিক্রম করতে হবে।

মধ্যাহ্ন ভােজনের পর রওনা হলাম।

জাহানাবাদ পার হলাম, তখন প্রায় সাড়ে ৪টা হবে।

কিন্তু মামী আর চলতে পারেন

পাড়াগেঁয়ে মেয়ের পক্ষে ৮। ১০ মাইল চলা কিছু কম নয়।

মামী পিছিয়ে পড়ছেন।

স্থির করলাম, সন্ধ্যার পূর্বেই কোন চটীতে আশ্রয় নিতে হবে ।

প্রান্তর মধ্যে একটি চটী পেয়ে সেখানে আশ্রয় নিলাম। পরদিন

বাংলাদেশে শ্রীমা সারদাদেবীর শিষ্যবৃন্দ ও তাদের স্মৃতিমালা স্বামী গিরিজানন্দ

শ্রীশ্রীমায়ের কাছ থেকে গৈরিক বস্ত্র স্বামী গিরিজানন্দ
শ্রীশ্রীমায়ের কাছ থেকে গৈরিক বস্ত্র স্বামী গিরিজানন্দ

তারকেশ্বরে এসে ট্রেনে চাপলাম।

সন্ধ্যার একটু পূর্বে মামীকে শ্যামবাজারে কুসুম ঠাকুরাণীর বাড়িতে দিয়ে যােগােদ্যানে গেলাম।

১৯০৭ সনের জুলাই মাসে, আমি, খ-মহারাজ ও জি-মহারাজ তিন বন্ধু সন্ন্যাস গ্রহণ মানসে মার দেশে রওনা হই।

সন্ন্যাসগ্রহণপূর্বক ভগবদাশ্রয় করব, এই আশায় মার নিকট উপস্থিত হলাম।

দুই একদিন মার নিকট থাকার পর একদিন আমাদের অভিলাষ মাকে নিবেদন করলাম।

মা বললেন, “ছেলেরা (ঠাকুরের সন্ন্যাসী শিষ্যেরা) সন্ন্যাস দেয়, তাদের নিকট থেকে সন্ন্যাস নিও।

” আমি বললাম, “দীক্ষার জন্য আপনাকে আশ্রয় করেছি, এখন সন্ন্যাসের জন্য অপরকে আশ্রয় করবাে এ অসম্ভব।

দুই গুরু কখনাে করবাে না।

যদি আপনি সন্ন্যাস দেন তবেই সন্ন্যাস নেব নচেৎ সাদা কাপড়েই আজীবন কাটাব।

” মা বললেন, “আচ্ছা এবিষয়ে আমার মতামত তােমাদের কাল জানাবাে।”

পরদিন প্রাতে মা বললেন,

“আজ তােমরা তিনজন মুণ্ডন করে থাক ও বস্ত্রাদি গৈরিক রং করে রাখ, কাল তােমাদের সন্ন্যাস দিব।

পর দিবস ২৯ জুলাই, সােমবার

শ্রীশ্রীঠাকুরের পূজান্তে মা আমাদের তিনজনের হাতে গৈরিক বহির্বাস ও কৌপীন দান করলেন এবং

শ্রীশ্রীঠাকুরের নিকট প্রার্থনা করলেন,

“ঠাকুর, এদের সন্ন্যাস রক্ষা করাে ; পাহাড়ে, পর্বতে, বনজঙ্গলে যেখানে থাকুক না কেন এদের দুটি খেতে দিও।

মার চরণে আত্মনিবেদন করে আমরা ধন্য হলাম ।

মা সাধুদের কর্তব্য সম্বন্ধে কিছু উপদেশ দিলেন।

“শ্রাদ্ধাদি কর্মে তােমাদের কোন অধিকার রইল না, এখন হতে সকলের অন্ন গ্রহণ করতে পারবে।

যদি কোন বান্দীর মেয়ে এসে ভিক্ষা দেয়, মা আনন্দময়ী দিচ্ছেন মনে করে খাবে।

” কথাপ্রসঙ্গে মা যােগীন মহারাজের কথা বললেন, “বৃন্দাবনে এক বৈষ্ণবী যােগীনকে নিমন্ত্রণ করে খাওয়ায়।

যােগীন যখন টের পেলে বৈষ্ণবী জাতিতে তাঁতী, তখন বমি করে আর কি ?

বামুনের ছেলে, এ সংস্কাৱ তথনাে যায় নি কিনা ?

” শাস্ত্রে ও সন্ন্যাসীর অনুরূপ ব্যবস্থা আছে লা ভিক্ষা অচিরেখ, মধুকর তং আছরেং, নান্ন দোষেণ মঙ্করী।

” ব্রাহ্মণ ক্ষত্রিয় বৈশ্য ও শূদ্র চার বর্ণেৱ নিকট অন্ন ভিক্ষা করবে।

মধুকর যেমন ফুল হতে অল্প অল্প মধু আহরণ করে জীবন ধারণ করে থাকে,

সন্ন্যাসী সেরূপ গৃহস্থের নিকট হতে অন্ন গ্রহণ করবে।

সন্ন্যাসীর অন্নদোষ হয় না।

বাংলাদেশে শ্রীমা সারদাদেবীর শিষ্যবৃন্দ ও তাদের স্মৃতিমালা _স্বামী গিরিজানন্দ

শ্রীশ্রীমায়ের কাছ থেকে গৈরিক বস্ত্র স্বামী গিরিজানন্দ
শ্রীশ্রীমায়ের কাছ থেকে গৈরিক বস্ত্র স্বামী গিরিজানন্দ

জি-মহারাজের ইচ্ছা ছিল পদব্রজে রামেশ্বর দর্শন করেন।

আমার ও খ-মহারাজের ইচ্ছা আমরা দুজনেই উত্তরাখণ্ডে যাব।

মাকে আমাদের অভিপ্রায় জানালাম।

মা বললেন, “রাখাল পুরী থেকে লিখেছে সেখানে কলেরা হচ্ছে, ওদিকে গিয়ে কাজ নেই।

তােমরা তিন জনে কাশী যাও।

আমি তারককে লিখে দিচ্ছি, সে তােমাদের সব বন্দোবস্ত করবে।

” মার আশীর্বাদ মস্তকে নিয়ে আমরা পদব্রজে কাশী রওনা হলাম।

জি-মহারাজের গয়ায় পিতৃপুরুষের পিণ্ডদানের ইচ্ছা ছিল,

কিন্তু মার কথানুযায়ী আর পিণ্ডদান করা হলাে না।

জনৈক পাণ্ডা গয়ায় আমাদেরকে বললেন,

“সন্ন্যাসীরা পিণ্ডদান করেন না বটে কিন্তু বিষ্ণুপাদপদ্মে ইষ্টমন্ত্র জপ ও সংকল্প দ্বারা পিণ্ডদানের ফললাভ করতে পারেন। আমরা তদ্রুপ করেছিলাম।

মার আদেশানুযায়ী পূজনীয় স্বামী শিবানন্দ আমাদের সন্ন্যাস নাম দেন।

১৯০৯ সনে মাকে যখন উদ্বোধন অফিসে দর্শন করি,

এই সময় স্বামী সত্যকাম মার অনেকগুলি ফটো ( মা ঠাকুরের পূজা করছেন, পা ছড়িয়ে বসে আছেন) উঠান।

তখন ১০। ১৫ দিন মার নিকট ছিলাম।

আবার ১৯১১ সনে কাশী হতে উদ্বোধন অফিসে এসে মাকে দর্শন করি।

যতদূর মনে হয়, এবছর পূজনীয় স্বামী রামকৃষ্ণানন্দ মাকে দর্শন করতে মাদ্রাজ হতে মঠে এসেছিলেন।

সুরেন্দ্রবিজয় নামক একটা কলেজের ছাত্র মঠে থাকতে চায়।

পূজনীয় বাবুরাম মহারাজ তাকে কিছুতেই মঠে রাখবেন না।

সেই ছেলেটাও কিছু না খেয়ে স্বামীজীর মন্দিরের নিকট বেলগাছের নীচে অভিমানে পড়ে রইল।

রামকৃষ্ণানন্দজীর দয়া হলাে, তিনি ছেলেটিকে বললেন,

“মাদ্রাজ মঠে থাকবে ?”

সুরেন্দ্রবিজয় অমনি স্বীকৃত হলাে ।

রামকৃষ্ণানন্দজী তাকে নিয়ে উদ্বোধন অফিসে গিয়ে মাকে বললেন,

“মা এ ছেলেটি আমার সঙ্গে মাদ্রাজ যাচ্ছে, একে সন্ন্যাস দিয়ে দেবেন কি ?”

মা বললেন, “শরৎকে বল, সে সন্ন্যাস দিক।

” পূজনীয় শরৎ মহারাজ বললেন, “আমি কার কি মনের ভাব বুঝিনা, আর সন্ন্যাস-টন্ন্যাস মহারাজ (স্বামী ব্রহ্মানন্দ) দেন।” মা বললেন, “তা হলে পুরীতে রাখালের নিকট থেকে নেয় যেন।”

বাংলাদেশে শ্রীমা সারদাদেবীর শিষ্যবৃন্দ ও তাদের স্মৃতিমালা _স্বামী গিরিজানন্দ

 ‘পুরীতেও মহারাজ তাকে প্রত্যাখ্যান করেন।

ছেলেটি কিছুদিন মাদ্রাজ মঠে থাকার পর ‘কাশীতে তার মাকে দেখতে আসে ও

পরে কলেজে ভর্তি হয়ে পুনরায় পড়াশুনা করে।

মা তার সাময়িক বৈরাগ্য লক্ষ্য করেই তাকে সন্ন্যাস দেন নি ।।

 আর একটি ঘটনা মনে পড়ে, একজন ব্রাহ্মণসন্তানকে মা গৈরিক-বসন দেন।

ছেলেটি বিহার সেক্রেটারীয়্যাটে কেরানী ছিল।

বৈরাগ্য হওয়ায় চাকরি ত্যাগ করে মার নিকট হতে গৈরিক ধারণ করে

  • হরিদ্বার,
  • ঋষিকেশ,
  • উত্তরকাশী।

প্রভৃতি স্থানে তপস্যা করে।

সন্ন্যাসীরা তাকে সন্ন্যাসােচিত বিরজা হােম করতে বলেন।

ছেলেটি মাকে বিরজা হােমের কথা নিবেদন করে।

মা তাকে পত্র লিখেন,

“বিরজা হােম অতি কঠিন ব্যাপার বলে আমি তােমাকে উহা করতে আদেশ দেইনি।

প্রায় পঞ্চদশ বছর তপস্যার পর উক্ত ছেলেটি গৃহিভাব গ্রহণ করে।

বুঝলাম, ছেলেটি আজীবন ত্যাগব্রত রাখতে পারবে না।

বলেই মা তাকে সন্ন্যাসীদের বিরজা হােম করতে নিষেধ করেছিলেন।

 একজন ব্রহ্মচারী পুরীতে পূজ্যপাদ স্বামী ব্রহ্মানন্দ মহারাজের নিকট হতে

দীক্ষা নেওয়ার আশায় পদব্রজে কোলকাতা হতে পুরী রওনা হয়।

মহারাজ যে কারণেই হােক,

দীক্ষামন্ত্র (বীজমন্ত্র সংযুক্ত) না দিয়ে জপের মত কিছু বলে দেন ।

সে তাতেই সন্তুষ্ট হয়ে কোলকাতায় চলে আসে।

একদিন উদ্বোধন অফিসে মাকে দর্শন করতে আসে।

মা তাকে দেখেই বললেন,

“বাবা, তােমার দীক্ষা হয়েছে ?”

সে বলল, “হ্যা, পুরীতে মহারাজ আমাকে দীক্ষা দিয়েছেন।”

মা বললেন, “না, তােমার দীক্ষা হয় নি, রাখাল তােমাকে দীক্ষা দেয়নি।

” তখন ছেলেটি বলল, “মা আপনি আমাকে দয়া করুন।” মা তাকে দীক্ষা দিলেন।

কিন্তু ছেলেটি পরে অপরাপর বন্ধুদের নিকট বলেছিল –

“মহারাজ আমাকে এই মন্ত্র দেন, মা আবার আমাকে এই মন্ত্র দিয়েছেন।

যখন সকলে তাকে বলল, দীক্ষামন্ত্র বলা শাস্ত্রবিরুদ্ধ, তখন সে ভয় পেয়ে মার নিকট এসে সব নিবেদন করল।

মা আমার দিকে চেয়ে বললেন,

“দেখ কি বােকা ! বীজমন্ত্র কি কাউকে বলে ?

এই দেখনা, এই অশ্বথ বৃক্ষের বীজ কত ছােট, কত নগণ্য, কিন্তু এই বিশাল বটবৃক্ষ এই ক্ষুদ্র বীজেই নিহিত রয়েছে।

যত্নে এত বড় বৃক্ষটি এই ক্ষুদ্র বীজ থেকেই বেরােয়।

সেরূপ বীজমন্ত্র অতি সংক্ষিপ্ত হলেও যত্ন করে সাধন করলে এর ভেতর দিয়ে ব্রহ্মজ্ঞান পর্যন্ত লাভ হয়।

মা তার দিকে চেয়ে বললেন, যাক, আর কাউকে বলাে না।

১৯১২ সনে মা কাশী আসেন এবং প্রায় তিন মাস কাশীতে ছিলেন।

আমি তখন কাশীতে পাণিনি ব্যাকরণ পড়ি।

সঙ্গে কাব্য উপনিষদ্‌ সভাষ্য পড়ছি।

পাঠে এতদূর মনোনিবেশ করেছি যে,

ধ্যান-জপের সময় পর্যন্ত ব্যাণের সূত্র, শব্দ, ধাতুরূপ প্রভৃতি

আমার চোখের সামনে ভাসতে হক বাণ যেন আমাকে পেয়ে বসেছিল ।

ভগবদ্ ধ্যান আর হয় না।

ভাবলাম , মাকে জানিয়ে এর একটা প্রতিকার করতে হবে।

যখন সাধুরা কেউ

নিকট নেই এমন সময় মাকে বললাম,

“মা আজকাল আমার মনটা বড়ই চঞ্চল, ধ্যান-জপ মোটেই হয় না।

” মা বললেন, “তুমি কি কিছু পড়?”

আমি বলল,

“হ্যা হিলেজে সংস্কৃবিভাগে আমি ব্যাকরণ ও উপনিষদ্ পড়ি ও

দুপুরে অপর একজন পণ্ডিতের নিকট ব্যাকরণ ও কাব্য পড়ি।”

একথা বলে মাত্র রাধু বলে উঠল,

“তাই তাে আমি ভাবি সাধু হয়ে অব কলেজে রোজ বই নিয়ে যায় কেন ?”

তখন মা বেশ জোরের সাথে বললেন,

“তুমি মনে করাে না একথাগুলাে তােমাকে একটি ছােট মেয়ে বলছে,

তুমি জানৰে মা জগদম্বা রাধুর মুখ দিয়ে তােমাকে বলছেন।

” আমি বললাম, “তবে কি লেখাপড়া ছেড়ে দেব ?”

মা বললেন, “একটা মন কোন্ দিকে দিবে, পড়ায় দিবে, না ভগবানে দিবে ?

পড়াশুনা ছেড়ে দাও।

” গুরুর আদেশ মস্তক পেতে গ্রহণ করলাম বটে, কিন্তু পুত্রশােক হলে মানুষের যা অবস্থা হয়, আমার প্রায় তদ্রপ।

ইতিপূর্বে পূজনীয় ব্রহ্মানন্দ মহারাজও আমার পড়াশুনার উপর কটাক্ষ করেছিলেন,

“কিরে, পণ্ডিত হবি নাকি?”

আমি তখন বলেছিলাম, “আপনি বলেন তাে পড়া ছেড়ে দি।

” তিনি তখন বলেছিলেন, “শাঙ্কর ভাষ্যগুলাে পড়ে নিস্।

মার কথার পর হতে আমার পণিনি ও কাৰ্য্যাদি পড়া ও কলেজে যাওয়া চিরদিনের মত বন্ধ হয়েছিল।

 মা কাশীখণ্ড” শুনার অভিপ্রায় প্রকাশ করেন।

আমি পাঠক হলাম।

কাশীতে মরলে মুক্তি হয়—এই কথা কাশীখণ্ডে লেখা আছে।

একদিন রাধু -মাকে বলল, “এই যে মাছিটা মরে পড়ে আছে, এটাও কি মুক্ত হলাে।

মা জোরের সাথে বললেন, “হ্যা ওটাও মুক্ত হলাে।

একদিন আমি মাকে বললাম ,

“মা এই যে কাশীতে কত গুন্ডা রয়েছে,

এরা এখানে মরে উদ্ধার হয়ে যাৱে-অর অন্যত্র হয়তাে একজন তপস্বী সামান্য কামনার জন্য আটকে যাৰে,

এটা কি ঠিক?”

আমি রাজা ভরত ও তার মৃগশিশুকে লক্ষ্য করে এই কথা বলেছিলাম 

 

 

 

Leave a Comment